করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন


করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিতভাবে কেউ জানিনা। তাই চলুন আজকের পুরো আর্টিকেলটি করলা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।করলায় আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন C, বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের করলা।

করলা-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

 আমাদের উপমহাদেশে পরিচিত একটি তিতা স্বাদের সবজি। অনেকেই এর তিতকুটে স্বাদকে অপছন্দ করেন, কিন্তু যারা এর প্রকৃত উপকারিতা জানেন, তারা করলাকে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখেন। করলা শুধু সবজি নয়, এটি এক প্রকার প্রাকৃতিক ওষুধ। তবে করলার যেমন অনেক গুণ, তেমনি কিছু সীমাবদ্ধতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-ও রয়েছে। বিরুদ্ধে দেহকে সুরক্ষা দেয়। আরো অনেক কিছু জানতে পুরো আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো করে পড়ুন।

পেজ সূচিপত্রঃ করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা কেউ জানিনা।স্বাদে তিতা হলেও করলা আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য এক অনন্য সবজি। প্রাচীনকাল থেকেই করলা নানা রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ে ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি শুধুমাত্র একটি খাদ্য উপাদান নয়, বরং একটি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে গণ্য করা হয়। করলার ইংরেজি নাম Bitter Gourd বা Bitter Melon, আর এটির বৈজ্ঞানিক নাম Momordica charantia। এর তিক্ততা অনেকের জন্য বিরক্তিকর হলেও, যারা এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন, তারা এটি স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখেন।

বিশেষ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করলা একটি জনপ্রিয় প্রাকৃতিক উপায়। তাছাড়া করলা হজমশক্তি বাড়ায়, লিভার পরিষ্কার রাখে, ওজন কমাতে সাহায্য করে, এমনকি ত্বক ও চুলের যত্নেও কার্যকর। তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতা বা অপকারিতাও আছে, বিশেষ করে অতিরিক্ত খাওয়া বা বিশেষ অবস্থা যেমন গর্ভাবস্থায়।

করলা একটি সাধারণ সবজি হলেও, এর গুণাগুণ অসাধারণ। এটি শরীরের ভিতর থেকে পরিষ্কার করে, রক্তের গুণগত মান উন্নত করে এবং একাধিক রোগ প্রতিরোধ করে। তবে যেকোনো খাদ্য উপাদানের মতোই, করলা খাওয়াতেও চাই পরিমিতি ও সচেতনতা। যারা নিয়মিত করলা খাচ্ছেন বা খেতে শুরু করবেন, তারা এটি স্বাস্থ্যের বন্ধু হিসেবেই দেখতে পারবেন।

করলা খাওয়ার উপকারিতা

করলা, বা তিতা করলা, এক প্রকার স্বাস্থ্যকর সবজি যা তার তিক্ত স্বাদের জন্য পরিচিত হলেও পুষ্টিগুণে ভরপুর। প্রাচীনকাল থেকে এটি বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে। করলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং বিশেষ কিছু উপাদান থাকে, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। বিশেষ করে করলা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, হজমে সহায়তায় এবং ত্বক-চুলের যত্নে অসাধারণ কার্যকর। যদিও এর তিক্ত স্বাদ অনেকের কাছে অপ্রিয়, তবুও করলার নিয়মিত সেবন স্বাস্থ্য রক্ষায় অনেক বড় ভূমিকা রাখে।
এই ভূমিকা থেকে বোঝা যায় করলা শুধু একটি খাদ্য নয়, এটি এক প্রকার প্রাকৃতিক ঔষধ, যা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়কঃকরলায় এমন উপাদান আছে যা রক্তে চিনির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ইনসুলিনের মতো কাজ করে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি খুবই উপকারী।
  •  হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃকরলা হজমে সহায়তা করে এবং পাকস্থলীর পাচনক্রিয়া উন্নত করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
  •  ওজন কমাতে সাহায্য করেঃকম ক্যালোরি ও বেশি ফাইবারযুক্ত হওয়ায় করলা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরতি রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমায়।
  •  ত্বক ও চুল ভালো রাখেঃকরলার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের ব্রণ, চুলকানি ও খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
  •  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃকরলায় রয়েছে ভিটামিন C, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
  •  লিভার পরিষ্কার রাখেঃকরলা যকৃত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং লিভারের কার্যক্ষমতা ভালো রাখে।

করলা খাওয়ার অপকারিতা

করলা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী একটি সবজি হলেও, এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা অপকারিতাও রয়েছে, যা সবাইকে জানা জরুরি। বিশেষ করে যারা গর্ভবতী নারী, রক্তচাপের সমস্যা বা হজম সংক্রান্ত অসুস্থতায় ভুগছেন, তাদের করলা খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত পরিমাণে করলা গ্রহণ করলে শরীরে কিছু অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। তাই করলা খাওয়ার সময় তার উপকারিতার পাশাপাশি এর সম্ভাব্য অপকারিতাও বুঝে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, যাতে সঠিক ও নিরাপদভাবে এই সুস্থকর সবজিটির ব্যবহার করা যায়।
কলা খাওয়ার উপকারিতা বিষয়ে কিছু নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • গর্ভাবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণঃকরলা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরাপদ নয়। এতে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান থাকে যা জরায়ুতে সংকোচন সৃষ্টি করতে পারে এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • অতিরিক্ত খেলে হজমে সমস্যাঃকরলার তিক্ত স্বাদ অতিরিক্ত হলে পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে।
  • লো ব্লাড প্রেসারের রোগীদের জন্য সমস্যাঃকরলা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, তাই যাদের রক্তচাপ স্বাভাবিকের থেকেও কম থাকে, তাদের অতিরিক্ত করলা খাওয়া উচিত নয় কারণ এটি রক্তচাপ আরো কমিয়ে দিতে পারে।
  • অ্যালার্জি বা সংবেদনশীলতাঃকিছু মানুষের শরীর করলার তিক্ত উপাদানে সংবেদনশীল হতে পারে, ফলে চুলকানি, দানা বা অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

করলা খাওয়ার নিয়ম

করলা খাওয়া শরীরের জন্য অনেক উপকারী হলেও, সঠিক নিয়ম না মানলে এটি কিছু অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে। তাই করলা গ্রহণের ক্ষেত্রে নিয়মাবলী মেনে চলা জরুরি। সঠিক সময়, পরিমাণ এবং প্রক্রিয়ায় করলা খেলে এর স্বাস্থ্যগুণগুলি সর্বোচ্চভাবে পাওয়া যায় এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি কমে। বিশেষ করে যাদের গর্ভাবস্থা, রক্তচাপ বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা আছে, তাদের জন্য করলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই ভূমিকা থেকে বোঝা যায়, করলা খাওয়া শুধু স্বাস্থ্যকরই নয়, সঠিক নিয়মে করলে তা নিরাপদও হয়।

করলা খাওয়ার নিয়ম নিচে দেওয়া হলোঃ

  • পরিমাণমতো খাওয়া উচিতঃকরলা খাওয়ার সময় পরিমাণ মেনে চলা খুব জরুরি। সাধারণত দিনে ১-২টি মাঝারি করলা বা আধা গ্লাস করলা জুস খাওয়া ভালো। অতিরিক্ত খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে।
  •  খালি পেটে এড়িয়ে চলুনঃখালি পেটে করলা খেলে হজমে অসুবিধা, বমি বমি ভাব বা পেট ব্যথা হতে পারে। তাই খাবারের পর করলা খাওয়াই শ্রেয়।
  •  গর্ভবতী নারীদের করলা খাওয়া এড়ানো উচিতঃগর্ভাবস্থায় করলা খেলে জরায়ু সংকোচনের সমস্যা হতে পারে, যা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
  •  রক্তচাপ কম থাকলে সাবধান হোনঃযাদের রক্তচাপ স্বাভাবিকের নিচে থাকে, তাদের করলা বেশি খাওয়া উচিত নয়, কারণ এটি রক্তচাপ আরও কমিয়ে দিতে পারে।
  •  রান্নার সময় তিতা স্বাদ কমানঃকরলা রান্নায় লবণ, মধু বা লেবুর রস ব্যবহার করলে এর তিতা স্বাদ কিছুটা কমে যায় এবং খেতে সুস্বাদু হয়।
  •  পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃকরলা খাওয়ার পর পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীর থেকে টক্সিন বের হতে সাহায্য করে এবং হজম ভালো হয়।

করলার পুষ্টিগুণ

করলা একটি পুষ্টিকর সবজি, যা তিক্ত স্বাদের হলেও শরীরের জন্য উপকারী অনেক গুণ নিয়ে থাকে। এতে রয়েছেঃ
  •  ভিটামিন সমৃদ্ধঃকরলা ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ-র একটি ভালো উৎস। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বক ও দেহের কোষ সুস্থ রাখে। ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
  •  খনিজ পদার্থঃকরলায় পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং আয়রন পাওয়া যায়, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, হাড় মজবুত এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  •  ফাইবার সমৃদ্ধঃকরলার উচ্চ ফাইবার উপাদান হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং লম্বা সময় পেট ভরা রাখে।
  •  অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানঃকরলায় উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহে ক্ষতিকর মুক্ত মৌল দমন করে, যার ফলে বার্ধক্য প্রক্রিয়া ধীর হয় এবং বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
  •  কম ক্যালোরিঃকরলা কম ক্যালোরিযুক্ত, তাই এটি ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য আদর্শ খাদ্য।

খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে করলার জুস খাওয়া শরীরের জন্য একটি প্রাকৃতিক ওষুধের মতো কাজ করে। করলার তিক্ত স্বাদ অনেকের কাছে অসহনীয় হলেও, এর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে অসাধারণ পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্যগত উপকারিতা। বিশেষ করে খালি পেটে করলার জুস গ্রহণ করলে শরীরের পাচন প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ ভালো হয়। এটি দেহ থেকে টক্সিন দূর করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। তাই স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের মধ্যে খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার চল খুবই জনপ্রিয়। এই ভূমিকা থেকে বোঝা যায় করলার জুস নিয়মিত এবং সঠিক নিয়মে গ্রহণ করলে শরীর সুস্থ ও শক্তিশালী রাখা সম্ভব।
খালি পেটে কলা জুস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে নিচে দেওয়া হলঃ
  • রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণঃখালি পেটে করলার জুস খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী।
  •  ডিটক্সিফিকেশন বা শরীর পরিষ্কারঃ করলার জুস শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে, ফলে লিভার ভালো থাকে এবং দেহের অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার থাকে।
  •  হজম শক্তি বৃদ্ধিঃখালি পেটে করলার জুস খেলে পাকস্থলীর কাজ ভালো হয় এবং খাবার হজম সহজ হয়।
  •  ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্যঃকরলার জুস খালি পেটে খেলে মেটাবলিজম দ্রুত হয়, যা অতিরিক্ত চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে।
  •  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ করলার জুসে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। 
  •  ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করেঃকরলার জুস নিয়মিত খেলে ত্বক পরিষ্কার হয় এবং ব্রণ কমে।

করলার জুস বানানোর নিয়ম

করলা, তার তিক্ত স্বাদের কারণে অনেকের কাছে একটু কঠিন হলেও, এর পুষ্টিগুণ ও ঔষধি গুণাগুণ অপরিসীম। করলার জুস হলো সেই স্বাস্থ্যকর পানীয় যা সহজেই তৈরি করা যায় এবং নিয়মিত খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং শরীরকে ডিটক্সিফাই করে। করলার জুস বানানোর সঠিক নিয়ম জানলে এর তিক্ত স্বাদ কিছুটা কমানো যায় এবং সুস্বাদু ও উপকারী একটি পানীয় তৈরি করা সম্ভব। তাই সঠিক পদ্ধতিতে করলার জুস তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা সহজেই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে সহায়ক হবে।
করলার জুস বানানোর নিয়মঃ
  • করলাঃ ১-২টি মাঝারি আকারের
  • পানিঃ ১ কাপ
  • লেবুর রসঃ ১ টেবিল চামচ 
  • মধু বা চিনিঃ স্বাদমতো 
  • বরফঃ কিছু 
প্রণালীঃ
  •  করলাকে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
  •  করলার দুই প্রান্ত কেটে ফেলুন এবং মাঝখান থেকে বীজ বের করে দিন।
  •  করলাকে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ব্লেন্ডারে দিন।
  •  ১ কাপ পানি দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন।
  •  মসৃণ জুস পেতে হলে ছেঁকে নিন।
  •  লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে স্বাদ মতো তৈরি করুন।
  •  বরফ দিয়ে ঠান্ডা পরিবেশন করুন।
টিপসঃ
  • করলার তিতা স্বাদ কমাতে জুস বানানোর আগে করলার টুকরোগুলো লেবুর রস বা লবণ পানি দিয়ে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে পারেন।
  • নিয়মিত সকালে খালি পেটে করলার জুস খাওয়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

ওজন কমাতে করলা কিভাবে খাবেন

আজকের ব্যস্ত জীবনযাত্রায় অনেকেই ওজন নিয়ন্ত্রণে সমস্যায় পড়েন। ওজন কমানো স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি সহজ কাজ নয়। প্রাকৃতিক খাদ্য ও জীবনধারার পরিবর্তন ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করে। এর মধ্যে করলা একটি শক্তিশালী সবজি হিসেবে পরিচিত, যা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। করলার মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ ও ফাইবার হজমে সহায়তা করে এবং দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা লাগতে দেয় না। তবে করলা থেকে সর্বোত্তম উপকার পেতে হলে সঠিক পদ্ধতিতে খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এই ভূমিকা থেকে বোঝা যায়, করলা ওজন কমানোর জন্য একটি কার্যকর উপায়, যা সঠিক নিয়মে গ্রহণ করলে দ্রুত ও স্বাস্থ্যকর ফলাফল দেয়।

ওজন কমাতে করলা কিভাবে খাবেন তা নিচে দেওয়া হলোঃ

  • সকালে খালি পেটে করলার জুস খাওয়াঃ প্রতিদিন সকালে উঠেই খালি পেটে এক গ্লাস করলার জুস পান করুন। এতে মেটাবলিজম বাড়ে এবং শরীর থেকে ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে।
  •  করলা সেদ্ধ বা ভাজি কম খাওয়াঃ করলা রান্নায় কম তেল ব্যবহার করে সেদ্ধ বা হালকা ভাজি হিসেবে খান। বেশি তেল বা মশলা দিলে ওজন কমানো কঠিন হতে পারে।
  •  করলা সঙ্গে অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াঃকরলার সাথে প্রোটিন ও সবজি সমৃদ্ধ খাবার খেলে পুষ্টির ভারসাম্য বজায় থাকে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  •  দিনে এক থেকে দুই বার করলা খানঃদিনে বেশি না হলেও ১-২ বার নিয়মিত করলা খাওয়া ওজন কমাতে কার্যকর।
  •  করলার তিক্ত স্বাদ কমাতে লেবু বা মধু ব্যবহার করুনঃকরলার তিতা স্বাদ কমাতে রান্নায় বা জুসে একটু লেবুর রস বা মধু মিশিয়ে খাওয়া যায়, যা খাওয়া সহজ করে।
  •  জল বেশি পান করুনঃকরলা খাওয়ার সাথে প্রচুর পানি পান করলে শরীর থেকে টক্সিন বের হতে সাহায্য করে এবং ওজন কমানো সহজ হয়।

রূপচর্চায় করলার ব্যবহার

প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রূপচর্চা আমাদের ত্বক ও চুলের যত্নে দীর্ঘকাল ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। করলা, যা সাধারণত একটি পুষ্টিকর সবজি হিসেবে পরিচিত, শুধু খাদ্য নয় রূপচর্চার ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত উপকারী। এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং ডিটক্সিফাইং উপাদান, যা ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। ব্রণ, র‍্যাশ, চুল পড়া বা ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যাওয়ার মতো সমস্যায় করলা প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে। রূপচর্চায় করলার ব্যবহার জানলে খুব সহজে ঘরোয়া উপায়ে ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য রক্ষা করা যায়।
রূপচর্চায় করলার ব্যবহার নিচে দেওয়া হলোঃ
 ব্রণ দূর করতে করলার রসঃ
  • করলা বাটে বা রস করে তুলার সাহায্যে মুখে লাগান।
  • ১০–১৫ মিনিট রেখে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
  • সপ্তাহে ২–৩ বার ব্যবহার করলে ব্রণ ও ফুসকুড়ি কমে যাবে।
 ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে করলা ফেসপ্যাকঃ
  • করলার রসের সাথে এক চামচ মধু ও এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন।
  • মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
  • এটি ত্বকের দাগ কমায় ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
 চুল পড়া রোধে করলার ব্যবহারঃ
  • করলার রস মাথার ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।
  • সপ্তাহে ১–২ বার ব্যবহার করুন।
  • এতে চুল পড়া কমে ও চুলের গোড়া শক্ত হয়।
 ডার্ক সার্কেল কমাতে করলাঃ
  • করলার রস তুলো দিয়ে চোখের নিচে লাগান।
  • ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন
  • এটি চোখের নিচের কালচে ভাব হ্রাসে সাহায্য করে।
 ত্বকের ফাঙ্গাল ইনফেকশনে করলার পেস্টঃ
  • করলা পেস্ট করে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট।
  • এতে অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে।

শেষ কথা/করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।করলা একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ঔষধি গুণসম্পন্ন সবজি, যা নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, হজম শক্তি বৃদ্ধি, ওজন হ্রাস এবং ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তবে অতিরিক্ত বা অনিয়মিতভাবে করলা খাওয়া কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে যেমন পেটের গ্যাস, মাথা ঘোরা, অথবা রক্তচাপ হ্রাস। 

বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের করলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আরো এরকম তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করুন ওপাশে থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এনি টিপস বিডি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url