চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহারের ১৫ টি উপায়


 চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার জানলে আপনি অবাক হবেন। কারি পাতা চুলের জন্য অনেক উপকার।  চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার করে আপনার চুলের যত্ন নিতে পারবেন। কারি পাতা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন থাকার ফলে তুলে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

চুলের-যত্নে-কারি-পাতার-ব্যবহার

কারি পাতায় রয়েছে প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে চুল পড়া বন্ধ করে ও অকালে চুল পাকা রোধ করতে সাহায্য করে। কারি পাতা ব্যবহারে ফলে চুল মসৃণ ও চকচকে করে। আমরা অনেকে জানি না এর ব্যবহার তাই চলুন জেনে আসি চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার।

পেজ সূচিপএঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার করার বিষয়ে আমরা অনেকেই জানি। কারি পাতায় রয়েছে প্রোটিন, বিটা কেরোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ জাতীয় ফলিক কে শক্তিশালী করে এবং ফুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে। এর ফলে চুল পড়া কমাতেও চুলের মজবুত করতে এবং চুলের বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। চুলে ব্যবহারে ফলে যাদের পাকা চুল রয়েছে তাদের ব্যবহারের ফলে কম চুল পাকে।

কারি পাতা চুলের যত্নে খুবই উপকারী। এতে চুল , পড়া কমাতে ও চুলের গোড়া মজবুত এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কারি পাতা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়, যেমন তেলের সাথে মিশে বা হেয়ার প্যাক তৈরি করে। বর্তমান সময়ে দূষণ বাড়ন্ত খাওয়া-দাওয়া নিয়ম মানসিক চাপের জন্য চুল পড়া সমস্যা হয়ে থাকে। হরেক রকম নামিদামি প্রসাধনী ব্যবহার করেও লাভ হচ্ছে না। তবে ঘরা টোটকা হিসেবে ভরসা রাখতে পারেন কারি পাতায় কারি পাতা ব্যবহারের ফলে চুলের হাড়িয়ে ফেলা উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে পারেন।

নারিকেল তেল ও কারি পাতা ব্যবহারে চুলের যত্ন

চুলের যত্নে নারিকেল তেল কারি পাতার ব্যবহার করতে পারেন। এটি বাড়িতে বসে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি করতে পারেন। চুলের যত্ন করার জন্য বাইরে কোন কিছু না কেনার প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরে বসে তৈরি করে আপনি ব্যবহার করতে পারেন। কারি পাতা নারিকেল তেল একসাথে যুক্ত করে চলে ব্যবহার করতে পারেন। আপনারা যেভাবে চুলের যত্নে নারিকেল তেল ও কারি পাতা ব্যবহার করবেন।

আরো পড়ুনঃ চুল পড়া রোধে পেঁয়াজের রসের উপকারিতা

প্রথমে ১০ থেকে ১৫টি কারি পাতা নিবেন। এরপর পাতাগুলো ভালো করে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিবেন। পরিষ্কার হলে পাতাগুলা ব্লেন্ডার করে নিবেন। ভালোভাবে ব্লেন্ডার করা হলে কারি পাতার পেস্ট এর সাথে দুই চামচ নারকেল তেল চুলায় ফুটিয়ে নিবেন। এরপর যখন তেলটি ঠান্ডা হবে তখন ভালোভাবে থেকে নিয়ে চুলের গোড়ায় গোড়ায় ব্যবহার করবেন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখার পর ভালো করে শ্যাম্পু করে নিবেন।

এইভাবে করে প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহারে ফলে চুলের গোড়া শক্ত এবং অতিরিক্ত নতুন চুল গজাতে সহায়তা করবে। কারি পাতা নারিকেল তেল ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ করবে চুল নরম ও মসৃণ করতে সাহায্য করবে। আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন চুলে কারি পাতার ব্যবহার।

গ্লিসারিন ও কারিপাতা ব্যবহারে চুলের যত্ন

গ্লিসারিন ও কারি পাতা ব্যবহারে চুলের যত্নে অত্যন্ত কার্যকরী ভাবে কাজ করে। এটি ব্যবহার করলে চুল শুষ্কতা ও রুক্ষতা থেকে রক্ষা পাবে। আপনারা ঘরে বসে এই প্যাকটি তৈরি করতে পারেন। বর্তমান সময়ে বাইরের প্রোডাক্ট ব্যবহারে ফলে চুলের সৌন্দর্য হারিয়ে। যায়। তাই চলুন ঘরোয়া ভাবে জেনে আসি চুলে গ্লিসারিন ও কারি পাতার ব্যবহার। 
প্রথমে ১০ থেকে ১৫ টি কারি পাতা নিয়ে ভালো পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর পাতার থেকে পানি গুলো ভালো করে ঝরিয়ে নিতে হবে তারপর এক কাপ পানিতে কারে পাতা গুলো ফুটিয়ে নিতে হবে। দশ মিনিটের মত ফুটিয়ে নেয়ার পর পানি যখন ঠান্ডা হবে তখন ভালোভাবে ছেকে নিতে হবে। তারপর পানি ওই কারি পাতা ফুটানো পানি মধ্যে দুই টেবিল চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে নিতে হবে। এবং সেই মিশ্রণটি একটি স্প্রে বোতলে রেখে দিতে হবে।
এরপর পুরো চুলে স্প্রে করে নিতে হবে ভালো করে। ৪০ মিনিট রেখে ভালো করে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। এভাবে করে সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন ব্যবহার করলে। চুলের শুষ্ক তাও রুক্ষতা থেকে রক্ষা পাবে। আর আর চুল হবে ঝলমলে ও  সিল্কি।

চুলের যত্নে কারি পাতা ও টক দইয়ের প্যাক ব্যবহার

চুলের যত্নে কারি পাতা ও টক দইয়ের প্যাক ব্যবহার করা যায়। এতে করে চুল অনেক উজ্জ্বল এবং সুন্দর দেখায়। একমুঠো পরিমাণে কারে পাতা নিয়ে ভালোভাবে পেস্ট করে নিতে হবে। এবং এর সাথে দুই টেবিল চামচ টক দই যুক্ত করে প্যাক বানিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করে নিতে হবে। এরপর ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রাখার পর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
চুলে কারি পাতা ও টক দই ব্যবহারে ফলে চুল পড়া অনেক কমে যাবে, চুলে খুশকি থাকলে খুশকি দূর হয়ে যাবে। চুল খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। চুল অনেক উজ্জ্বল দেখাবে এবং চুল অনেক মসৃণ ও নরম হবে। এরকম ভাবে সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে চুলের সৌন্দর্য হারাবে না।

চুলের যত্নে কারি পাতা ও মেথির ব্যবহার

চুলের যত্নে কারি পাতা ও মেথির ব্যবহার দুটোই বেশ উপকারী। মেথি চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়া কমায় এবং খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। কারি পাতা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক  চুল ঘন করে এবং অকালে পেকে যাওয়া রোধ করে। ঘরোয়া ভাবে চুলের যত্নে কারি পাতাও মেথির প্যাক তৈরি করা যেতে পারে। তাহলে চলুন জেনে আসি কিভাবে প্যাক তৈরি করা যায়।

আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রথমে ১০ থেকে ১৫ টা কারিপাতা ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। অন্যদিকে মেথি আগের দিন রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর কারি পাতা এবং ভেজানো মেথি একসঙ্গে ব্লেন্ডার করে নিতে হবে। এরপর সারা মাথায় ভালো করে দিতে হবে। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। এইভাবে করে যদি সপ্তাহে দুবার ব্যবহার করা যায় তাহলে বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং চুল থাকে স্বাস্থ্যজ্জল ও সুন্দর।

চুলের যত্নে কারি পাতা ও জবা ফুলের ব্যবহার

চুলের যত্নে কারি পাতাও জবা ফুলের ব্যবহার প্রাকৃতিকভাবে সাহায্য করে থাকে। এই দুইটি উপাদান একত্রে করে তুললে ব্যবহার করলে চুল পড়া এবং খুশকি দুটোই অনেক কমে যায়। কারি পাতাও জবা ফুল দিয়ে তেল বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। কারে পাতা এবং জবা ফুল দিয়ে প্যাক বানিয়ে তুলে ব্যবহার করা যায়। চলুন জেনে আসি কিভাবে কারি পাতা ও জবা ফুলের তেল বানানো যায়।
প্রথমত ১০ থেকে ১৫ টা কারি পাতা ভালো করে ধুয়ে নিয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এরপর ৫০০ মিলি নারিকেল তেল নিতে হবে এর সাথে পাঁচ ছয়টা জবা ফুল ও কারি পাতাগুলা নিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর যখন ঠান্ডা হবে ঠান্ডা হলে থেকে নিয়ে কাচের বোতলে সংরক্ষণ করতে হবে। এই তেলটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন চুলের গোড়ায় আগায় ব্যবহার করতে পারেন।
এছাড়া কারি পাতাও জবা ফুল ধুয়ে নিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিয়ে চুলের গোড়ায় গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে নিতে পারেন। এরপর ৪০ মিনিট রেখে দিয়ে ভালো করে শ্যাম্পু করে নিবেন। এভাবে চুলে ব্যবহার করলে চুলের বৃদ্ধি চুলের খুশকি দূর এবং উজ্জ্বল ফুল তুলে আনতে সাহায্য করবে। 

 কারি পাতা ও ডিম ব্যবহারের চুলের যত্ন

কারি পাতা এবং ডিম দুটোই চুলের যত্নের জন্য খুবই উপকারী। পাতা চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়া কমায় এবং চুলে বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কন্ডিশন করে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। ডিমের রয়েছে প্রোটিন এবং কারি পাতা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে এটা চুল দ্রুত বৃদ্ধি এবং মসৃণ করতে সাহায্য করে।
এক মুঠো কারিপাতা ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে এরপর ব্লেন্ডার করে এর সাথে একটি ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে মিশে পেস্ট করে নিতে হবে। তবে অতিরিক্ত হিসেবে এবং নারিকেল তেল যুক্ত করতে পারেন। সবগুলো উপকরণ একসাথে ভালো করে পেস্ট করে পুরো চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রাখার পর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এইভাবে সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলে হবে ঝলমলেও উজ্জ্বল।

নিম পাতা ও কারি পাতা চুলের ব্যবহার

চুলের যত্নে নিম পাতাও কারে পাতার ব্যবহার এর ফলে আশ্চর্যজনক এক ধরনের পরিবর্তন দেখায়। এই দুইটি উপাদানে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্টি ফাংগাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল। এটি চুলকে বৃদ্ধি করতে এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। ফলে চুলে উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

১০ থেকে ১৫ টি কারি পাতা ও নিমপাতা ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর এই উপাদান দুটো এক সঙ্গে ব্লেন্ডার করে নিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এরপর পুরো চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রেখে দিতে হবে। চুল হালকা শুকালে ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে করে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করলে চুলের গোড়া মজবুত হবে চুল পড়া বন্ধ হবে চুলের খুশকি দূর হবে।

কারি পাতা ও পেঁয়াজ ব্যবহারে চুলের যত্ন 

কারি পাতাও পেঁয়াজ ব্যবহারে তুলে যত্ন খুবই সহজ। আপনারা ঘরে বসেই চুলে ব্যবহার করতে পারবেন  ঘরে থাকা জিনিস দিয়ে। আপনারা অনেকেই চুলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ভুগতেছেন। চলুন তাহলে জেনে আসি কারিপাতা ও পেঁয়াজের ব্যবহারে চুলের যত্ন।
এক মুঠো কারিপাতা এবং দুইটা মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ নিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ডার করে নিতে হবে। আপনারা চাইলে সাথে মেথির গুড়ো যুক্ত করতে পারেন। ভালোভাবে এই উপকরণগুলো যুক্ত করে পেস্ট বানিয়ে মাথায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিবেন। এরপর ৪০ থেকে ৫০ মিনিট রেখে হালকা শুকালে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিবেন। পেয়াজ চুল গজাতে সাহায্য করে। এভাবে করে সপ্তাহে দুবার লাগালে চুল পড়া বন্ধ হবে।

শেষ কথা/চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার এর ফলে চুলের অনেক সমস্যা দূর হয়। আর চুলের উজ্জ্বলতা ও ঝলমলে ভাব ফিরিয়ে নিয়ে আসে। যাদের অতিরিক্ত চুল পরে বা চুলের বিভিন্ন সমস্যা ভুগছেন তারা উপরে উক্ত সকল  পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে চুলের সমস্যা দূর হবে।
আপনারা চুল ঝলমলে এবং মজবুত করতে তেল এবং প্যাক বানিয়ে চুলের গোড়ায় এবং চুলে মালিশ করে আপনারা তুলে উজ্জ্বলতা ফিরে আনতে পারেন। এইটা ছেলে মেয়ে উভয়ের প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। আশা করি আপনারা পুরো পোস্টটি ভাল করে বুঝতে পারছেন। আরো এরকম তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি্তে ফলো করুন।

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এনি টিপস বিডি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url